পিউবার্টি ও পিরিয়ড: জানা উচিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো

পিরিয়ডের A to Z

পিউবার্টি অ্যান্ড পিরিয়ড

পিউবার্টি কী?

পিউবার্টি এমন একটি সময় যা প্রতিটি মেয়ের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে। এটি শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের একটি ধাপ, যা সাধারণত আট থেকে তেরো বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। অনেকেই মনে করেন, পিরিয়ড শুরু হওয়া মানেই পিউবার্টি শুরু হয়েছে, তবে এটি পিউবার্টির একটি অংশমাত্র।

পিরিয়ড ও পিউবার্টির সম্পর্ক

পিরিয়ড, বা মেনস্ট্রুয়েশন, হল পিউবার্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক পরিবর্তনগুলোর একটি। এটি শরীরের রিপ্রডাকটিভ সিস্টেমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

পরামর্শ দিচ্ছেন:

  • ডা. প্রসেনজিৎ সরকার (কনসালট্যান্ট অবস্টেট্রিশিয়ান ও গাইনিকলজিস্ট)
  • ডা. রিমা মুখোপাধ্যায় (মনোরোগ চিকিৎসক)

পিউবার্টির সময় সাধারণ কিছু সমস্যা

১. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)

এই সমস্যার দুটি প্রধান কারণ:

  • বেশি বাইরের খাবার খাওয়া
  • শরীরচর্চা বা খেলাধুলো না করা

২. প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম (PMS)

পিরিয়ডের আগে কিছু মেয়ের মধ্যে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়, যেমন:

  • মাইগ্রেন
  • শরীর ফুলে যাওয়া
  • অবসাদ ও বিরক্তিভাব

৩. সার্ভাইক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধ

ভারতীয় মেয়েদের মধ্যে সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের হার বেশি। এটি প্রতিরোধের জন্য প্রথম সেক্সুয়াল অ্যাকটিভিটির পরে অ্যান্টি-ক্যানসার ভ্যাকসিন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।


মানসিক পরিবর্তন ও মুড সুইং

১. আত্মবিশ্বাস ও দেহ সচেতনতা

পিউবার্টির সময় মেয়েরা শরীরের পরিবর্তন নিয়ে বেশি সচেতন হয়ে ওঠে। বন্ধুরা বা আশপাশের মানুষের মন্তব্য তাদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, ব্রেস্ট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য মানসিক কষ্টের কারণ হতে পারে।

২. মুড সুইং ও মানসিক স্বাস্থ্য

প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিস্পোরিক ডিজঅর্ডার (PMDD) হলে:

  • সবসময় রাগ ও বিরক্তিভাব থাকে
  • দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকলে এটি ডিপ্রেশনে পরিণত হতে পারে

বড়দের উচিত মেয়েদের মনের অবস্থার দিকে নজর রাখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।


পিরিয়ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান

১. মেয়েদের কীভাবে প্রস্তুত করা উচিত?

  • পিরিয়ড সম্পর্কে খোলাখুলি কথা বলা
  • স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা
  • স্ট্রেস কমানোর জন্য ব্যায়াম ও মেডিটেশন করা

২. পিরিয়ডের সময় ব্যথা হলে কী করবেন?

অনেকেরই মেনস্ট্রুয়েশনের সময় ব্যথা হয়। এ ধরনের ব্যথাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।


পরিবারের করণীয়

  • মেয়েদের সচেতন করুন: পিরিয়ড একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, এটি বোঝাতে হবে।
  • খাবার ও শরীরচর্চায় গুরুত্ব দিন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা মেনস্ট্রুয়েশনজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
  • প্যানিক করবেন না: যদি মেয়েদের পিরিয়ড দেরিতে শুরু হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, তবে অযথা ভয় পাবেন না।

টিনএজার সেক্স এবং সচেতনতা

টিনএজারদের সেক্স সংক্রান্ত বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। বাড়িতে এমন পরিবেশ তৈরি করা উচিত যাতে তারা নিজেদের প্রশ্ন ও কৌতূহল নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে।

কীভাবে সাহায্য করবেন?

  • সেক্স ও কন্ট্রাসেপশন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিন
  • সন্তানের প্রতি আস্থা রাখুন এবং তাদের আস্থাও অর্জন করুন
  • কঠোর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে না দিয়ে তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *